রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত মহিলার দেহ নিয়ে টানাপোড়েন অব‍্যাহত : তরজা বাম ও রাম শিবিরে

6th May 2021 10:42 pm বর্ধমান
রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত মহিলার দেহ  নিয়ে টানাপোড়েন অব‍্যাহত : তরজা বাম ও রাম শিবিরে


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : মৃতদেহ মর্গ থেকে আনার লোকনেই ।তিন দিন ধরে মর্গেই  পড়ে রয়েছে মৃতদেহ।অথচ  ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার বলি হওয়া মহিলা কাকলি ক্ষেত্রপাল কে নিয়ে চরমে কাজিয়া শুরু করে দিয়েছে সিপিএম ও বিজেপির । রাজনৈতিক সংঘর্ষে গত সোমবার নিহত হন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার নবগ্রামেের ষষ্ঠিতলা নিবাসী বছর ৪৭ বয়সী কাকলি ক্ষেত্রপাল । সিপিএম নেতৃত্ব দাবি করছেন কাকলিদেবী তাঁদের পার্টির কর্মী।একই ভাবে বিজেপি নেতৃত্বও দাবি করছেন কাকলীদেবী ও তাঁর পরিবার বিজেপি পার্টিরই লোক। ভোটে ভরাডুবির পরেও মৃতদেহ নিয়ে রাম ও বামেদের এই কাজিয়া শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় গত সোমবার উত্তপ্ত হয় জামালপুরের নববগ্রাম।  ওই দিন তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষে নিহত হন দুই তৃণমূল কর্মী শাজাহান শা ওরফে সাজু (৩০), বিভাস বাগ (২৭)এবং নবগ্রামের বিজেপি শক্তি প্রমুখ আশিস ক্ষেত্রপালের মা কাকলি দেবী। রাজনৈতিক হিংসায় একই দিনে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে  তোলপাড় ফেলে দেয়। ঘটনা পরবর্তিতে নড়ে নড়ে বসেন পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তারা।গ্রেপ্তার হয় ১২ জন । গত মঙ্গলবার তিনজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্থের জন্যে পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। কিন্তু সেই দিন থেকে কাকলি দেবীর মৃতদেহ মর্গ থেকে আনার কেউ নেই । কাকলিদেবীর স্বামী অনিল ক্ষেত্রপাল বর্ধমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । গা ঢাকা দিয়েছে তাঁর ছেলে আশিষ ক্ষেত্রপাল সহ পরিবারের অন্যরা।এই অবস্থার মধ্যে কাকলিদেবীর মৃত দেহের দাবি নিয়ে জামালপুরে কাজিযা শুরু করেদিল বিজেপি ও তৃণমূল নেতৃত্ব  ।  কাকলি ক্ষেত্রপালের মৃত্যুর পরেই সিপিএম নেতৃত্ব দাবি করেন কাকলীদেবী তাঁদের পার্টির কর্মী । জামালপুর নিবাসী সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সমর ঘোষ দাবি করেছেন ,“কাকলি ক্ষেত্রপাল তাঁদের সিপিএম পার্টির সাধারণ সদস্য ছিলেন। তাই তারা মর্গ থেকে কাকলিদেবীর মৃতদেহ আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন“।   সিপিএম নেতাদের এমন দাবির যদিও  তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন, জামালপুর বিধানসভার বিজেপি নেতৃত্ব । ব্লকের বিজেপি আহ্বায়ক জিতেন ডাকাল  বৃহস্পতিবার  বলেন ,নিহত কাকলি ক্ষেত্রপালের ছেলে আশিস বিজেপির শক্তি প্রমুখ । সবাই জানে আশিসের গোটা  পরিবারের সদস্যরা বিজেপির  কর্মী। জিতেন বাবু বলেন , কাকলিদেবীর মৃতদেহ তিন দিন ধরে  বর্ধমান মর্গে পড়ে রয়েছে ।তৃণমূলের  সন্ত্রাস আতঙ্কে পরিবারের কেউ  মৃতদেহ  আনতে যেতে চাইছে না ।তাঁরাও আনতে যেতে পাছেন না ।  মৃতদেহ মর্গ থেকে এনে যাতে সৎকার করা যায় তার জন্যে এদিন তাঁরা জামালপুর  থানার ওসি-র সঙ্গে  কথা বলেন । জিতেন বাবু আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন ,“অযাচিত ভাবে কাকলিদেবীর মৃতদেহ নিয়ে সিপিএম ঘৃণ্য রাজনীতি করছে । কারণ  এবারের ভোটে সিপিএম গোটা রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে । তাই এখন  কাকলিদেবীর মৃতদেহ নিয়ে  সিপিএম নেতারা সহানুভূতি আদায়ের নোংরা রাজনীতির খেলা শুরু করে দিয়েছে“ ।  তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জামালপুর ব্লক সভাপতি ভূতনাথ মালিক এই প্রসঙ্গে বলেন ,“মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করার বিষয়ে সিপিএম ও  বিজেপি দুই দলই পটু ।ভোটে হরে যাওয়ার পরেও ওরা সেই ঘৃণ্য ’লাশের’  রাজনীতির খেলায় মেতে উঠেছে ।এরথেকে বড় লজ্জার আর কিছু হতে পারে না । রাজ্যবাসী আগামী দিনেও ওদের একই রকম যোগ্য জবাব দেবে“ । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।